গণভবনে আজ সন্ধ্যা ৭টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ বৈঠকে বসছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের নির্দেশ অমান্যকারীদের ব্যাপারে এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে এবার দলীয় প্রতীক তুলে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে কেউ প্রতীক পাচ্ছেন না। প্রতীক বরাদ্দ না থাকায় যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন। মাঠ উন্মুক্ত থাকলেও বিপত্তি বেধেছে অন্য জায়গায়।
তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্যরা তাদের পছন্দমতো প্রার্থী, এমনকি আত্মীয়স্বজনদেরও নির্বাচনের মাঠে নামাচ্ছেন। ফলে সংসদ সদস্যদের ছায়া থাকছে নির্দিষ্ট কিছু প্রার্থীর প্রতি। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগ সভাপতি গত ১৮ এপ্রিল মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দেন। হাইকমান্ডের নির্দেশও আমলে নেননি অনেকে।
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ৮ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা ছিল গত ২২ এপ্রিল। কিন্তু এখনো ২০ উপজেলায় ২৯ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে সরব রয়েছেন, যারা স্থানীয় এমপির স্বজন ও নিকটাত্মীয়। আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ। দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করে দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মন্ত্রী-এমপির ২০ জন স্বজন মাঠে রয়েছেন। এছাড়া অন্য ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন রয়েছেন প্রায় ৩০ জন।
মন্ত্রী-এমপি এমনকি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এক শ্রেণির নেতারাও মানছেন না দলীয় সিদ্ধান্ত। তৃণমূলে দলীয় সিদ্ধান্ত না মানার প্রবণতা আরো ভয়াবহ। সংগঠনকে তোয়াক্কা না করে নিজস্ব বলয় সৃষ্টির মাধ্যমে ফ্রি স্টাইলে চলছেন অনেকে। এটা সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম।
শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ ও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করলে বহিষ্কারসহ নানা শাস্তির কথা আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে রয়েছে। গত ১৫ বছরে একাধিকবার গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে গত ১৫ বছরে ৫ হাজার নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও পরে আবার সাধারণ ক্ষমা পেয়ে যান। দলীয় পদবি এমনকি মনোনয়নও দেওয়া হয়েছে তাদের। এ কারণে এবারের উপজেলা নির্বাচনেও দলীয় সভাপতির নির্দেশনা আমলে নেননি অনেক মন্ত্রী-এমপি ও নেতা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, একটি রাজনৈতিক দল পরিচালিত হয় দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনিক কাঠামোর মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত পালন করা নিচের সব কমিটির জন্য বাধ্যতামূলক। এখানে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দলের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে।
Leave a Reply